অনেকেরই দোয়া করার সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহতালা কবুল করে নেয়। আবার অনেকেরই আছে যাদের দোয়া আল্লাহ তা’আলা কবুল করে কিন্তু অনেক পরে তা ফল প্রকাশিত হয়। আবার অনেকে আছে দোয়া কবুল হতে অনেক সময় নেয় এবং অনেক সময় হয়না। যাদের দোয়া কবুল হয় না তারা হয়তো দোয়া কবুলের কিছু আদব রয়েছে সে সম্পর্কে জানেনা আজকের এই আর্টিকেলে দোয়া কবুল হওয়ার দোয়া ও কোন কোন সময় দোয়া করলে আল্লাহ তা’আলা সবচেয়ে বেশি খুশি হন তা তুলে ধরবো।
কোন কোন দোয়া পড়লে দোয়া কবুল হয়, দোয়া কবুল হওয়ার আমল, দ্রুত দোয়া কবুল হওয়ার জন্য যা যা করণীয় সে সম্পর্কে সকল তথ্য আজকের এই আর্টিকেলটিতে পেয়ে যাবেন। আজকের এই আর্টিকেল জুড়ে থাকছে দোয়া কবুল হওয়া নিয়ে সকল উপায়। তো আর দেরি না করে চলুন দেখে নেয়া যায়।
কোন সূরা পড়লে দোয়া কবুল হয়
মোনাজাত মানে হলো মহান রবের সাথে একান্ত আলাপচারিতা। মানুষে মানুষের সম্পর্কে যত মোহাব্বতের ই হোক না কেন মহান রব্বুল আলামীনের সাথে সম্পর্ক হতে হবে সর্বোচ্চ বেশি। চোখের পানি ফেলে তওবা তসবি ও দরুদ শরীফ পাঠ করে আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া চাওয়া খুবই আনন্দের এবং এর মাঝে আলাদা একরকম শান্তি পাওয়া যায়।
হযরত আনাস রাহমাতুল্লাহ আলাইহি বর্ণনা করেছেন, আমি একদিন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মসজিদে বসা ছিলাম। তখন একজন লোক নামাজ পড়ছিল সে বলল,
اَللَّهُمَّ اِنِّىْ أَسْأَلُكَ بِاَنَّ لَكَ الْحَمْدُ لَا اِلَهَ اِلَّا اَنْتَ الْحَنَّانُ الْمَنَّانُ بَدِيْعُ السَّمَوَاتِ وَ الْرضِ يَاذَا الجَلَالِ وَ الْا ِكْرَامِ يَا حَىُّ يَا قَيُّوْمُ اَسْأَلُكَ
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করি। সব প্রশংসা তোমার জন্য তুমি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই। তুমি দয়া দানকারী আসমান ও জমিনের স্রষ্টা তুমি। স্রষ্টার মালিক! হে চিরঞ্জীব ও চির অবস্থানকারী তোমার কাছে আশ্রয় চাই।
** নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন_ সে ইসমে আজম পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করেছে। ইসমে আজমের সঙ্গে দোয়া করলে তিনি তা কবুল করেন।
দ্রুত দোয়া কবুল হওয়ার আমল
দোয়া শব্দের অর্থ হলো আল্লাহ তাআলা কে ঢাকা, কিছু চাওয়া, প্রার্থনা করা অর্থাৎ বিনয় ও নিষ্ঠার সাথে মহান আল্লাহ তাআলার কাছে কোন কিছু প্রার্থনা করা। আর এ প্রার্থনা করাই এই দোয়া বলা হয়। আর আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমরা আমাকে ডাকো আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব। যারা আমার ইবাদতে অহংকার করে তারা অচিরেই জাহান্নামে প্রবেশ করবে।(সূরা মুমিন, আয়াত ৬০)
সহীহ বুখারী শরীফের পাওয়া যায় হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুম্মার দিন সম্পর্কে আলোচনায় বললেন, এদিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, যে কোন মুসলিম বান্দা যদি এ সময় নামাজে দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে তবে মহান আল্লাহ অবশ্যই তা দিয়ে থাকেন এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন এই মুহূর্তটি খুবই সংক্ষিপ্ত। তাই আমাদের পবিত্র জুম্মার দিনে সব সময় দোয়া দরুদ পড়ে আল্লাহ তায়ালার কাছে চাইতে হবে। তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা আমাদের মনের আশা পূরণ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।
দোয়া কবুল হওয়ার দোয়া
আপনার জীবনের যত বড়ই বালা মুসিবত বিপদ আসুক না কেন আপনি এ দোয়াটি পাঠ করবেন। এই দোয়াটি পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা আপনার সকল বালা মুসিবত এবং দুঃখ-কষ্ট দূর করে দিবেন ইনশাল্লাহ।
لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জালিমিন।
অর্থ: আপনি ব্যতীত আর কোন উপাস্য নেই, আমি আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি, অবশ্যই আমি পাপী। (সূরা আম্বিয়া, আয়াত ৮৭)
দোয়া কবুলের ইস্তেগফার
দোয়া করার আগে ইস্তেগফার পাঠ করলে আল্লাহ তা’আলা আরো বেশি খুশি হন। এতে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা আরো অনেক বৃদ্ধি পায়। আমরা তো সবসময় দোয়া ইস্তেগফার পড়েই দোয়া করে থাকি আল্লাহতালার কাছে কিন্তু অনেক সময় সেগুলো দ্রুত দেখতে পারিনা এর জন্য আমাদের করণীয় দোয়া শুরুর মাঝেও শেষে আল্লাহতালা প্রশংসা করা যেমন_ আল্লাহু আকবার, আলহামদুলিল্লাহ, সুবহানাল্লাহ বলা। আল্লাহ তায়ালার কাছে আমরা যেকোনো সময়ই দোয়া ও প্রার্থনা করতে পারি কিন্তু বিশেষ কিছু মুহূর্তে আল্লাহ তাআলা আমাদের দোয়া গুলো গুরুত্বসহকারে শোনেন এবং কবুল করে নেন বলে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে দুটি সময় হলো- রাতের শেষ সময়ে এবং ফজরের নামাজের পর।
দ্রুত দোয়া কবুল হওয়ার আমল
আল্লাহ তাআলার সুন্দর সুন্দর নাম গুলো পড়েও আপনি দোয়া করতে পারেন কেননা আল্লাহ তায়ালার সুন্দর সুন্দর নাম গুলো পাঠ করলে আল্লাহতালা খুবই খুশি হন। ওযু অবস্থায় দোয়া করবেন কেবলামুখী হয়ে দোয়া করবেন। এছাড়াও আপনি একটা উসিলা করে দোয়া করতে পারেন এতে আল্লাহ তায়ালা খুব দ্রুত আপনার দোয়া কবুল করে নিতে পারেন।
কোন কোন দোয়া পড়লে মনের আসা কবুল হয়
নবী করীম সাঃ বলেছেন দোয়া ইবাদতের মগজ বা মূল। দোয়া হলো আল্লাহ তাআলার রহমতের বড় হাতিয়ার।আল্লাহতালা নিজে বান্দাদেরকে বেশি বেশি দোয়া করতে বলেছেন, পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে তোমরা আমার নিকট দোয়া করো আমি তোমাদের দোয়া কবুল করবো। নিশ্চয় যারা আমার কাছে দোয়া করতে অহংকার করে তারা অপমানিত ও লজ্জিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।(সূরা মুমিন, আয়াত ৬০) একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলো কোন সময় দোয়া দ্রুত কবুল হয়? তিনি উত্তরে বললেন শেষ রাত এবং ফজর নামাজের পর (সুনামে তিরমিজি, হাদিস ৩৪৯৮)